Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Tuesday, November 28, 2017

দর্শন আসলে কি বলে , তাহা না বুঝিলে কি চলে ?

দর্শন বিষয়ে আমার ধারনা টা আগে পরিষ্কার ছিলো না।জানার ইচ্ছা জাগল যখন দেখলাম কলেজ পরীক্ষায় প্রশ্ন আসল-“বিজ্ঞান আবিষ্কার করে দর্শন ব্যখা করে”-বুঝিয়ে লেখ।তাই ঠেলায় পড়ে একটু জানতে চেষ্টা করলাম আর কি।
আগে ভাবতাম,দর্শন আবার কি?-দেখা…হ্যাঁ,সেটাই তো হওয়ার কথা।আমার ধারনা আসলে আংশিক সঠিক ছিল ।দর্শন শাস্ত্র দেখতে বলে তবে সেটা গভীর থেকে গভীরতর ভাবে দেখা-খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা-চুল ছেঁড়া(!) বিশ্লেষণ যাকে বলে আর কি।আবার
ইংরেজিতে বলে ‘Philosophy’ যার
গঠনগত অর্থ জ্ঞানের
প্রতি অনুরাগ।

 



তা জ্ঞানের প্রতি অনুরাগ তো ফিজিসিস্ট(পদার্থবিদ) দেরও আছে,নাকি?তাহলে ফিজিক্স আর দর্শনের মধ্যে পার্থক্য টা কি?এটা বুঝতে পারলেই আসলে আমরা ধরতে পারব দর্শন আমাদের স্পেশালি কি বলতে চায়-আসুন তাহলে একটু বুঝতে চেষ্টা করা যাক :
এক সময় ফিজিক্স কে বলা হত ন্যাচারাল ফিলোসফি, কিন্তু সেই যুগের ফিজিক্স আর এই যুগের ফিজিক্স এর মধ্যে তফাৎ আছে। অন্তত পদার্থ বিজ্ঞানীদের গবেষনা পদ্ধতিতে এসেছে বিপুল পরিবর্তন। তাই এখন এ নামের প্রচলন উঠে গেছে। আর বিপুল যে পরিবর্তনের কথা বললাম তা আপনাদের ভালো মতই বোঝার কথা।মডার্ন ফিজিক্স অতিমাত্রায় গাণিতিক এবং সব কিছুই সমীকরণের ম্যাধ্যমে বা গাণিতিক ফর্মে প্রকাশ করতে চায়(গনিত পদার্থের মাতৃভাষা কিনা!)।এছাড়া সমীকরণ আর বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ এ দুয়ের সামঞ্জস্য আনতে একই জিনিস প্রয়োজনে অগনিত বার এক্সপেরিমেন্ট করা হয়-লক্ষ একটাই,আবিষ্কার টিকে একটা ভাষা দেওয়া;আর সেটাই হল গণিত বা গাণিতিক যুক্তিভাষা ।
দর্শনের সাথে ফিজিক্সের পার্থক্য ঠিক এখানেই।দর্শনে ‘প্রয়োগ’ শব্দটার ব্যবহার কম,’দেখা’ ও ‘চিন্তা’ এ শব্দ ২ টির ব্যবহার বেশি(তাই তো কোনো বন্ধু বেশি ভাবুক মাইন্ডের হলে আমরা তাকে ইয়ার্কি করে দার্শনিক বলে বসি).
একটু উদাহরন দেওয়া যাক-ধরুন নিউটন দেখলেন কোনো পদার্থ কে আঘাত করলে প্রতি-আঘাত পাওয়া যাচ্ছে…এ দেখে তিনি চিন্তা করলেন সকল ক্রিয়ার ই একটি সমান প্রতিক্রিয়া আছে-আমরা বলব এটা তার একটি চিন্তা বা দর্শন।কিন্তু এর পর F1=-F2 থেকে ভরবেগ পরিবর্তনের সুত্র প্রতিপাদন এ সব ই ফিজিক্সের মধ্যে পরে যাচ্ছে।
আচ্ছা,এখন তাহলে বলুন তো,ফিজিক্স আর দর্শন এর মিল কোথায়?
কোথায় আবার..কিছুক্ষন আগেই না বললাম ফিজিক্স হচ্ছে ন্যাচারাল ফিলোসফি,অর্থাৎ অতি গাণিতিক ব্যাপার টি বাদ দিলেই ফিজিক্স হয়ে গেল দর্শন;বলা যায় দর্শন এখন ফিজিক্স এরই একটি অংশ।চিন্তা ভাবনা করা এগুলো ফিজিক্স বহির্ভুত কোনো কাজ নয়।বরং আমরা সব থেকে পরিষ্কার করে এভাবে বলতে পারি-
***দর্শন হচ্ছে ফিজিক্সের বিশুদ্ধ কল্পনার ক্ষেত্র।
***পদার্থবিদ মাত্রই দার্শনিক,তবে সব দার্শনিকই পদার্থবিদ নন।
***যেহেতু চিন্তার স্বাধীনতা সকল বিষয়েই আছে তাই বিভিন্ন বিষয়ে দার্শনিক হওয়া যায়(এমনকি ভাষা,সাহিত্য ইত্যাদি) কিন্তু পদার্থবিদ তো শুধু পদার্থের জন্যই নিবেদিত প্রাণ(বাকি বিষয়ে নাই জ্ঞান o.O)
একটা জোকস এ পরেছিলাম- যেখানে এক ইউনিভার্সিটির ডিন তার ফিজিক্স ডিপার্টমেন্ট এর লেকচারার কে ডেকে বললেন-“তোমাদের এক্সপেরিমেন্ট গুলো এতো ব্যায়বহুল যে টাকা ঢালতে ঢালতে ফতুর হয়ে গেলাম।তোমরা কি ম্যাথ ডিপার্টমেন্ট এর মতো চলতে পারনা?যাদের শুধু কয়েকটা পেন্সিল আর কাগজ ফেলার ঝুরি হলেই কাজ চলে যায়।কিংবা ফিলসফি ডিপার্টমেন্ট এর মতো যাদের ঐ ঝুরি টুকু ও প্রয়োজন পরে না 😛 😀
আশা করি দর্শন সম্পর্কে ধারণাটা পরিষ্কার হয়েছে।
সবাইকে লেখাটি কষ্ট করে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages