আমরা জানি ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখা মানেই খাবারের ওপরে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি। কিন্তু আজ এমন কিছু খাবার সম্পর্কে জানাবো যা ওজন কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এসব খাবার আপনার দেহের দৈনিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত মেদ কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই নিন্মোক্ত খবারগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন।গ্রীন টি :চর্বি কমাতে বা ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে গ্রীন টি গুরুত্বপূর্ণ একটি পানীয়। এতে কাটেচিন নামক এক ধরনের এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত গ্রীন টি পান করে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। এছাড়া গ্রীন টি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমায়। ফলে ভালো কোলেস্টেরল এর অনুপাত বৃদ্ধি পায়।কাঠবাদাম :কাঠবাদাম একটি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার।ফলে এটি আপনার ক্ষুধানুভূতি কমায়। তাছাড়া এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিনও মিনারেল রয়েছে। যা আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। তাছাড়া বাদাম অন্য খাবার থেকে আসা ক্যালোরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ওজন কমাতে আপনার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন কাঠবাদাম।দই :সকাল-দুপুর-রাত যেকোনা সময়ে খেতে পারেন দই। যাদের ওজন বেশি তাদের শরীরের ফ্যাট কোষ থেকে কর্টিসল নামক হরমোন তৈরি হয়। এই হরমোন কোমর ও পেটেরচারপাশের মেদ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। দইয়ে বিদ্যমান ক্যালশিয়াম কর্টিসল তৈরিতে বাধা দেয়। দইয়ে থাকা অ্যামিনো এসিড ফ্যাট কমিয়ে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া এটি ভালো হজমে সাহায্য করে।ডিমের সাদা অংশ :প্রোটিনে ভরপুর ডিমের সাদা অংশ আপনার ওজন হ্রাসে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। ডিম খেলে ওজন বাড়ে এমন ভূল ধারণা রয়েছে অনেকের। তবে ওজন কমাতে চাইলে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো। ডিমের সাদা অংশ দীর্ঘ সময় আপনাকে ক্ষুধার অনুভূতি থেকে দূরে রাখবে। এতে বিদ্যমান প্রোটিন আপনার শরীরের কর্মক্ষমতার যোগান দিবে। এতে ক্যালরির পরিমাণও কম থাকে। সার্বিক দিক থেকে এটি আপনার ওজন হ্রাসে সহায়তা করবে।ওটস :ফাইবার সমৃদ্ধ ওটস রাখুন খাদ্যতালিকায়। ওটসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, লৌহ, প্রোটিন, ভিটামিন বি। বিশেষত ওটসে থাকা ভিটামিন বি ১ শরীরে কার্বোহাইড্রেট হজমে সাহায্য করে। এটি আপনাকে ক্ষুধামুক্ত রাখবে দীর্ঘ সময়। ফলে অতিরিক্ত খাবার বা চর্বিযুক্ত খাবারথেকে নিজেকে অনেকটাই দূরে সরিয়ে নিতে পারবেন। সে সঙ্গে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার।আপেল :একটি মাঝারি আকারের আপেল থেকে আপনি পেতে পারেন ৪.৪ গ্রাম ফাইবার। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওজন কমাতে এর গুরুত্ব কতোটা। আপেলে পেকটিন নামক ফাইবার আছে, যা সহজে তরলে মিশে যায়| এই ফাইবার অন্ত্রনালিতে কোলেস্টেরল জমতে না দিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে আরো নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা দেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।বেরি জাতীয় ফল :বেরি জাতীয় ফল বলতে আমরা চেরি, স্টবেরি, ব্লুবেরি, জাম ইত্যাদিকে বুঝি। ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরিতে ক্যালোরি মাত্র ৩৫ গ্রাম৷ এই ফলে থাকা ফাইবার বা আঁশ আপনাকে মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে৷ এই জাতীয় ফলে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা কেবলমাত্র বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিই কমাবে না, স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও কাজ করে।গাজর :গাজরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, বেটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন রয়েছে। এটি অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে আপনাকে দূরে রাখার পাশাপাশি ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখবে। কাজেই সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারটি রাখার চেষ্টা করুন। এছাড়া এটি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করবে।ক্যাপসিকাম :ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’। এই ভিটামিন ‘সি’ খুব সহজেও খুব দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করে। লাল, হলুদ কিংবা সবুজ যে কোন ধরনের ক্যাপসিকাম খেতে পারেন রান্নায় ব্যবহার করে। সব থেকে ভালো উপায় সালাদে ক্যাপসিকাম খাওয়া, যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।ব্রকলি :ব্রকলি জিরো ফ্যাট সবজি। যা যেকোনো খাবারের সাথে খেতে পারেন। এতে রযেছে দেহের প্রযোজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি উপদান। মাত্র এক কাপ সেদ্ধ ব্রোকলিতে পাঁচ গ্রাম ফাইবার রয়েছে, যা অনেকটা সময় আপনাকে চর্বিযুক্ত নানা ধরনের ফাস্টফুড থেকে বিরত রাখবে।উপরোক্ত খাবারগুলো আজই আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করুন। তবে যারা ইতিমধ্যে মেদ বা চর্বি সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। চর্বি বা মেদ কমানো শুধু ডায়েটিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে কমানো সম্ভব নয়।ডায়েটিংয়ের পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম ও কিছু চিকিৎসার মাধম্যে মেদ কমানো সম্ভব।
Post Top Ad
Your Ad Spot
Thursday, November 9, 2017
যেসব খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে
Tags
খাদ্য ও স্বাস্থ্য#
Share This
About Raihanul Haque
খাদ্য ও স্বাস্থ্য
Labels:
খাদ্য ও স্বাস্থ্য
Post Top Ad
Your Ad Spot
Author Details
----