Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Monday, October 16, 2017

ঋতুচক্রে স্ত্রী প্রজনন তন্ত্র মাসিক নিয়ে কিছু কথা

প্রথম মাসিক ঋতুচক্র কে ম্যানারচ বলে ( Menarche , যাকে পিউবারটি বা যৌবনের সুচনা বলা যায় ) এবং ইহা শুরু হওয়ার দুই বছর পর থেকে নিয়মিত ভাবে মহিলাদের চক্রাকারে যে ঋতুচক্র হয়ে থাকে তাকেই মাসিক ঋতুচক্র বলতে পারেন ।মেয়েদের মধ্যে ম্যানারচ শুরু হওয়ার গড় বয়স ১১ বছর এবং প্রথম দুই বছর মাসিক ঋতুচক্র অনিয়মিত হয় অর্থাৎ প্রতি মাসে হয় না এবং সে সময় ফারটিলাইজেশনের জন্য ডিম্বক্ষরণ (Ovaluation) জরুরি, কিন্তু প্রথম দিকের মাসিকগুলোতে ডিম্বক্ষরণ ঘটতেও পারে আবার নাও ঘটতে পারে বিধায়প্রথম ঋতুস্রাব হওয়ার পরবর্তী প্রথম বছরে (প্রায় ১৩ বছর বয়সে) ১০% মেয়ের ঋতুচক্রে ডিম্বক্ষরণ ঘটে, ৫০% মেয়ের তৃতীয় বছরে (প্রায়১৫ বছর বয়সে) এবং ৯৬% মেয়ের ষষ্ঠ বছরে (প্রায় ১৮ বছর বয়সে) ডিম্বক্ষরণ ঘটে থাকে ।মাসিক কখন শুরু এবং শেষ হয় ?নারীদের প্রজনন প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয় সাধারণত: ১০-১৬ বছরের মাঝামাঝি বয়সেই বেশী দেখা যায় তবে ক্ষেত্র বিশেষ কোন কোন মেয়েদের ৯বছর বয়সে, আবার কারো কারো ও বেলায় বিশেষ করে শীত প্রধান দেশে ১৬ বা তার অধিক বয়সে প্রথম মাসিক হওয়া অবাস্থব কিছু নয় । গড়ে মেয়েদেরই ১২ বছর বয়স থেকেই মাসিক শুরু হওয়ার প্রবনতা বেশী এবং তা চলতে থাকে বয়স ৪৫ থেকে ৫০পর্যন্ত অর্থাৎ একজন নারী প্রৌরত্বে উপনীত হলে তা বন্ধ হয়ে যায় , যাকে বলা হয় রজ:ক্ষান্তি ( Menopause ) বলা হয় ।মসিক চক্র বা ঋতুচক্রের প্রক্রিয়া ? ( What is the menstrual cycle? )মাসিল চক্র বা ঋতুচক্র ( Menstrual cycle) বলতে নারীদেহের ২৮ দিনের একটি পর্যায়ক্রমিক শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া বোঝায়। এই চক্র আটাশ দিন পর পর বা তার ২/৩ দিন আগে বা পরেও হতে পারে।নারীদেহের জননতন্ত্রে জরায়ুর ওপরেরদিকে দুই পাশ থেকে দুটি নল চলে গেছে,তাকে বলা হয় ডিম্ববাহীনালি বা ফ্যালোপিয়ান টিউব। আর নিচের দিকে জরায়ুর মুখ ( সারভিক্স ) সংযোজিত হয়ে থাকে যোনিপথের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়ে থাকে । জরায়ুর উপর দিকেফ্যালোপিয়ান টিউবের শেষ প্রান্তে দুই পাশে থাকে দুটি ওভারি বা ডিম্বাশয়। যার যেকোনো একটি থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু বা ওভাম নির্গত হয়ে ফ্যালোপিয়ান টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে আসে পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার জন্য ।( একজন মহিলা গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী মাসিকের শেষ দিন হতে ১৩,১৪,১৫.১৬,১৭ নাম্বার দিন হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন ১৩ এবং ১৪ নাম্বার দিন । এ সময় আসে একটি ডিম্বানু ডিম্বাশয় থেকে নির্গত হওয়ার পর ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে , গর্ভধারণের লক্ষ্যে এ সময়ের মধ্যে ডিম্বাণুটিকে শুক্রাণুর সাথে মিলিত হলে “সহবাস করলে ” ৮০% বেলায় গর্ভ সঞ্চারিত হওয়ার কথা যদি ঠিক ২৮ দিন পর পর ঋতুচক্র নিয়মিত হয়ে থাকে – তবে যদি কারও কারও ৩/৫ দিন পর হয় সেই হিসেব অতিরিক্ত ৩/৫ দিন যোগ করতে হবে )এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না-আসে এবং এই না-আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের এন্ডমেট্রিয়াম স্তর ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন শ্লেষ্মা ঝিল্লির আবরণে ‘ইসট্রোজেন’ ও ‘প্রজেসটেরোনের’ সম্মিলিত ক্রিয়া শুরু হয়। সেই ঝিল্লির বিবর্তনের ফল এবং তা চক্রাকারে সময় লাগে ২৮ দিন ( ক্ষেত্র বিশেষ , মানসিক, আবহাওয়াগত,এক্সিডেন্ট, যৌন রোগ, হরমোন অথবা হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্যতার কারনে ৩/৫ দিন ব্যাবদান হতে পারে ) । তখন উক্ত মহিলা সহবাস বা অন্য কোন উপায়ে ডিম্বানু শুক্রানুর সাথে মিলন না ঘটিয়ে থাকেন তাহলে তা রক্ত আকারে যোনি পথ দিয়ে বেরিয়ে আসে – আর সম্পূর্ণ এই প্রক্রিয়া কে মাসিল চক্র বা ঋতুচক্র বলে থাকি।ফিজিওলজি অনুসারে মাসিক চক্র প্রধানত তিনটি পর্বে বিভক্ত করতে পারেন –১. মিনস্ট্রাল ফেজ ঃ ( মাসিক চলাকালীনসময় থেকে শেষ ) এর স্খিতিকাল হলো পাঁচথেকে সাত দিন অথবা যাদের পুস্টি অথবাআয়রনের অভাব তাদের বেলায় তিন থেকে চার দিন। এ সময় যোনীপথে রক্তমিশ্রিত রস ক্ষরণ হয়। এতে রক্তের সাথে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ অস্খায়ী স্তরের খসে পড়া কোষ কলা এবং কিছু কিছু গ্ল্যান্ডের রস মিশ্রিত থাকে। ( ১- ৭ )২. প্রলিফেরাটিভ ফেজ : ৮-১০ দিন স্থায়ী হতে পারে। শুধু ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে এটি হয়। এই সময় জরায়ু নিষিক্ত ডিম্বানুকে গ্রহন করার জন্য প্রস্ততি নেয়। ( ৭-১৬ )৩. সিকরেটরি ফেজ : সেক্রেটরি ফেজ টা সবচেয়ে দীর্ঘ, প্রায় ১০ থেকে ১৪ দিন। একে প্রজেস্টেরন বা লুটিয়াল ফেজ ও বলা হয়। এটিও ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন উভয় হরমোনের যৌথ কারনে হয়। এই সময় নিষিক্ত ডিম্বানুর বৃদ্ধির জন্য জরায়ু সর্বোচ্চ প্রস্ততি নিয়ে থাকে।ডিম্বাশয়ের কোনো ডিম্বানু শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত না হলে পুনরায় মাসিক শুরু হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয় । ( ১৩/১৭ ) গড়ে ৮ % বেলায় ঋতুচক্রের ১৪ নাম্বার দিন থেকে ১৭/১৮ নাম্বার দিন পর্যন্ত এই ৪/৫ দিন গর্ভ সঞ্ছারের সম্বাভনা সবচেয়ে বেশী ।মাসিক ঋতুচক্রের জন্য কখন চিকিৎসকের পরামর্ষ নিতে হবে ?যদি মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে এবং একি সাথে মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেশী হয় অথবা বেশী দিন হয় অথবা অনেক দেরিতে হয় তাহলে অবশ্যই দ্বিতীয় পর্বের মাসিক চক্রের সময় হাউস ফিজিশিয়ানের পরামর্ষ নেওয়া উচিৎ অথবা তা যদি না করতে পারেন তাহলে ঘরোয়া ভাবে অভিজ্ঞ কারও পরামর্ষে ( বিশেষ করে নিজের মা অথবা সেই ধরণের কেউ ) উপযোক্ত ব্যাবস্তা গ্রহন করলে তার কারন খুঁজে পেতে পারেন । যদি কারন খুঁজে না পান তাহলে তৃতীয় মাসিকচক্রের আগে অবশ্যই সঠিক ডায়াগনোসিস করা উচিৎ বা বিশেষজ্ঞ কে দেখাতে হবে । ( বিঃদ্রঃ সে সময় অনভিজ্ঞ বা কুসঙ্কস্কার জাতীয় আত্মবিশ্বাসী যেকেউ অথবা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অভিজ্ঞতা ছাড়া যে কোন পুরুষদের কাছ থেকে থেকে পরামর্ষ না নেওয়াই উত্তম ।সৃতি – আমার বাস্থবে শেষ দেখা পর্যন্ত হরমোন জনিত ব্যাঘাত, টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি অনেকের ই ধরা পড়েছিল যার মধ্যে সবাই খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পেরেছেন । )কি কি কারনে ঋতুচক্র বন্ধ অথবা দেরিতে হতে পারে ?নিছের ১১ টি কারনে ঋতুচক্র বন্ধ অথবাঅনিয়মিত হতে পারে =গর্ভসঞ্চার ( যদি সহবাস করে থাকেন তাহলে ঋতুচক্র বন্ধ হওয়ার তারিখ থেকে এক সপ্তাহ পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করালে পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারেন , তবে সবচেয়ে ভাল হয় ল্যাব্রেটারির মাধ্যমে পরিক্ষা করা। )মানসিক ভিশন্নতা ঃযদি মানসিক ভিশন্নতা থাকে তাহলে শরীর থেকে এ্যড্রিনালিন এবং করটিসল হরমোন বেশী উৎপাদিত হয় বিধায় মানসিক ভিশন্নতার কারনে ও ঋতু স্রাব দেরিতে হতে পারে তবে তার সাথে শারীরিক অন্যান্য অসুবিধা বিশেষ করে হটফ্ল্যাস জাতীয় অসুবিধা থাকবে । যেমন মুখ-কান-ঘাড়-মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয়, রাতে গাঁ ঘামা,শরীর অবসাদবোধ , মাথা ব্যাথা, ওজন হ্রাস, ভ্রুন এবং চরমজাত অন্যান্য অসুখ বিশুখ ইত্যাদি ।শারীরিক দুর্বলতা এবং পুস্টিজনিত অভাব ঃশরীর বেশী অসুস্থ থাকলে ডিম্বঅভুলেশন প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করতে বিলম্বিত হওয়ায় ইস্ট্রোন হরমোন কম উৎপাদিত হয় ফলে সময় মত মাসিকস্রাব হতে বিলম্বিত হতে পারে অথবা রক্তে আয়রনের অভাবে ও তা হতে পারে ।ওজন ঃখুব বেশী ওজন বেড়ে যাওয়া অথবা হঠাৎ করে ওজন কমানোর কারন মস্তিষ্কের হাইপো-থ্যালামাস খুব বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ঠিক মত হরমোন সমুহ নিঃসরণ করতে পারেনা বিশেষ করে হঠাৎ ওজন হ্রাস করলে জরায়ুর পাথলা আবরণী সমুহ সংকোচিত বা ছোট হয়ে পরে এবং তা থেকে ইস্ট্রোজেনের উৎপাদন ক্ষ্যামতা7

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages