শিক্ষকের আচরণে অপমানিত স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যাকুষ্টিয়ায় শিক্ষকের অশালীন আচরণ সইতে না পেরে ডালিম খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কেএসএম কলেজিয়েট স্কুলের এই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। প্রতিবাদে স্কুল ঘেরাওসহ দায়ী শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। ডালিম মিরপুর উপজেলার কবরবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আকবর আলীর মেয়ে।জানা গেছে, বুধবার মডেল টেস্ট শুরু। তাই আগের দিন মঙ্গলবার স্কুলে প্রবেশপত্র নেয়ার জন্য যায় ডালিম। স্কুলের সহকারী শিক্ষক মামুনর রশিদ মাসুদের কাছে প্রবেশপত্র চাইলে তিনি জানান,তুমি তো পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। কারণ তুমি মডেল টেস্টের জন্য টাকা জমা দাওনি। তবে ডালিম তখন বলে সে আর তার ভাই শিক্ষক মাসুদের কাছে টাকা দিয়েছে।কথার এক পর্যায়ে ডালিম ওই শিক্ষককে বলে স্যার আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। ডালিমের এমন কথা শুনে রাগান্বিত হন শিক্ষক মাসুদ। তিনি বলেন, তোমার পরীক্ষা দিয়ে কাজ নেই। তোমার তো চেহারা খুব সুন্দর, তুমি মডেল টেস্ট না দিয়ে মডেলিং করো। এতে ভালো করবে।শিক্ষক মাসুদের এমন কথা শুনে ডালিম ছুটে যায় অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম ডাবলুর কাছে। সেখানেও কোনো সদুত্তর পায়নি। এক পর্যায়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে নিজ ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ডালিম।ডালিমের মা ফুলি বেগমের অভিযোগ, ডালিমকে এ ব্যাপারে সদুত্তর না দিয়ে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন শিক্ষক মাসুদ। পরে ডালিম বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলামকাছে যায়। তিনিও পাত্তা দেননি ডালিমকে। উল্টো তিনি ডালিমকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসে সে। পরে বিকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ডালিম।আত্মহত্যার আগে সে মোবাইল ফোনে তার মামাতো ভাইয়ের কাছে শিক্ষকের অশালীন আচরণের কথা জানায়। ডালিমের বড় ভাই রুবেল হোসেন জানান, মাস দুয়েক আগে মডেল টেস্টে অংশ নেয়ার ছোট বোন ডালিমকে নিয়ে স্কুলে গিয়ে স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাসুদের কাছে ফরম পুরণ বাবদ টাকা দেন।ডালিমের মামাতো ভাই রোমেল হোসেন জানান, শিক্ষক মাসুদ ও অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম তার বোনের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন। ফোনে ডালিম তাকে সব ঘটনা জানায়।চাচা নুর হোসেন জানান, ঘটনার পর এলাকার লোকজনসহ শিক্ষক মাসুদ ও অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম ডাবলুর কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি। তারা অসংলগ্ন কথা বলেছেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়েআমি দায়ি শিক্ষকদের শাস্তি চাই।স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কবরবাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম জানান, ডালিমের মৃত্যুর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী। আমরা অভিভাবক হিসেবে ডালিমের মৃত্যুর জন্য অধ্যক্ষ ও সহকারী শিক্ষকের শাস্তি চাই। তবে ডালিমের মুত্যুর বিষয়ে কেএসএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ওসহকারী শিক্ষক।এদিকে বুধবার সকাল ১০টার দিকে ডালিমের স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে স্কুল ঘেরাও করে। তারা অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে অধ্যক্ষ ও সহকারী শিক্ষক মাসুদের ওপর চড়াও হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ব্যাপারে জগতি পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ আল আমীন জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে ডালিমের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পায়নি।
Post Top Ad
Your Ad Spot
Wednesday, October 11, 2017
শিক্ষকের আচরণে অপমানিত স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
Tags
বিনোদনের খবর#
Share This
About Raihanul Haque
বিনোদনের খবর
Labels:
বিনোদনের খবর
Post Top Ad
Your Ad Spot
Author Details
----