ঘরের সবচেয়ে ছোট সদস্য, মাধ্যমিক পড়ুয়া চঞ্চল বোনটি হঠাৎ করেই যেন বড় হয়ে যাচ্ছে। মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে সে বেশ গম্ভীর ও মনমরা হয়ে থাকে। মাঝে মাঝেই সে ব্যথায় চিৎকার করে কাঁদে। আপনার মা যতই এই ব্যথাকে মাথা ব্যথা বা জ্বর বলে এড়িয়ে যান না কেন, আপনি ভালভাবেই বুঝতে পারেন আপনার বোনটি মাসিকের সময় ব্যথা হলে এভাবেই কষ্ট পায়।মাসিকের সময় তলপেট, কোমর, উরু, পিঠ এসব স্থানে ব্যথা অনুভূত হয়। মাঝে মাঝে এই ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে। এই ধরনের কিছু কিছু লক্ষণ কোন ভাবেই স্বাভাবিক হতে পারে না। তাই রাখঢাক না করে মাসিকের সময় ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।মাসিকের সময় ব্যথা কী?মাসিক চলাকালীন সময়ে বা মাসিক শুরু হওয়ার আগে তলপেট, মেরুদন্ড ও পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা খুব তীব্রনা হলেও কোনো কোনো মহিলার ক্ষেত্রে খুব বেশি ব্যথা হতে পারে। এমনকি ব্যথার ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে।এন্ডোমেট্রিয়োসিস (endometriosis) বা ইউটেরাইন ফাইব্রোয়েডস (uterine fibroids) এর কারণে মাসিকের সময় ব্যথাহয়ে থাকে। তবে কোনো সুনিদির্ষ্ট কারণে এই ব্যথা না হলে সময়ের সাথে সাথে, বিশেষ করে একবার সন্তান প্রসবের পর এই ব্যথা অনেক কমে আসে। মাসিকের সময় যে ব্যথা হয়ে থাকে তা মেনোর্যালজিয়া (Menorrhalgia), মেন্সট্রুয়াল ক্রাম্পস (Menstrual cramps) এবং ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) নামে পরিচিত।মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার কী কী কারণ থাকতে পারে?নিম্নলিখিত কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে-ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশনবা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথা।ইডিওপ্যাথিক এক্সেসিভ মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশী দিন মাসিক হওয়া।ওভারিয়ান সিস্ট।অনিয়মিত মাসিক চক্র।এনডোমেট্রিয়সিস।ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড।ভলভোডাইনিয়া।যোনিপথেসিস্ট।কোন কোন বিষয়গুলো মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে?যেসকল ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলো-যেসব মহিলার বয়স ৩০ বছরের নিচে।যাদের মাসিক ১১ বছর বা তার আগে শুরু হয়েছে।মাসিকের সময় রক্তপাত বেশি হলে।মাসিক অনিয়মিত হলে।পরিবারের অন্য কারো এ সমস্যা থাকলে।পূর্বে কখনো সন্তান প্রসব না করলে।ধূমপানের কারণে।প্রত্যেক মেয়েরই কী এ সমস্যা হয়ে থাকে?না, প্রত্যেকেরই মাসিকের সময় ব্যথা হয় না। তবে অধিকাংশ মেয়েরই মাসিকের সময় মেরুদন্ড ও তলপেটে ব্যথা ও টান অনুভূত হয়। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তি বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হিটিং প্যাড ব্যবহারের মাধ্যমে বা হালকা গরম পানিতে গোসল করলে এক্ষেত্রে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। আবার হালকা ব্যায়ামও করা যেতে পারে।মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার কোন পর্যায়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে-টানা তিন মাস পর্যন্ত এ ব্যথা স্থায়ী হলে।তলপেটে খিঁচুনি/টানের সাথে ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব দেখা দিলে।মাসিকের সময় ছাড়াও তলপেটে ব্যথা হলে।আই-ইউ-ডি প্রতিস্থাপনের পর ব্যথা হলে।এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় কী?মাসিকের সময় ব্যথা হলে বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেমনঃপিঠ ও পেল্ভিক অংশে হিটিং প্যাড বা হট ওয়াটার ব্যাগের সাহায্যে সেঁক দিতে হবে।তলপেটে হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।গরম পানিতে গোসল করতে হবে।প্রতিবার টয়লেটে গিয়ে সাধারণ পানির পরিবর্তে উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন। এতে আপনার তলপেটের ব্যথা অনেকাংশে কমে আসে।শরবত বা ফলের রস পান করুন।নিয়মিত ব্যায়াম ও অনুশীলন করতে হবে।পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।বিভিন্ন রিলাক্সেশন টেকনিক যেমনঃ যোগব্যায়াম করতে হবে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
Post Top Ad
Your Ad Spot
Monday, September 11, 2017
মাসিকের সময় তলপেট, কোমর, উরু, পিঠ এসব স্থানে ব্যথা হলে কী করবেন?
Tags
যৌন বিষয়ক টিপস#
Share This
About Raihanul Haque
যৌন বিষয়ক টিপস
Labels:
যৌন বিষয়ক টিপস
Post Top Ad
Your Ad Spot
Author Details
----