Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Monday, July 31, 2017

‘হ্যাকিং অসম্ভব’ ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করছে চীন

হ্যাকারদের যন্ত্রণায় আর ভয়ে প্রযুক্তির দুনিয়া কখনো স্বস্তিতে থাকে না। নিরপত্তাহীনতার শঙ্কায় ভুগতে হয় সব সময়। যতই শক্তপোক্ত নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেওয়া হোক নাকেন, হ্যাকাররা ফাঁকফোকর ঠিকই বের করে নেয়। তাদের যন্ত্রণায় বিভিন্ন দেশের সরকারের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নাকানি-চুবানি খায় মাঝে মাঝেই। কিন্তু এ অবস্থা আর নয় বলে বদ্ধপরিকর চীন। তারা এমন ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে যা কিনা হ্যাকিং সম্ভব নয়। এটাকে ‘আনহ্যাকেবল’ ইন্টারনেট বলা হচ্ছে।এই প্রযুক্তি কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি হতে চলেছে। গতানুগতিকএনক্রিপশন পদ্ধতি থেকে পুরাই আলাদা একপন্থা এটি। জিয়ান শহরে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যবস্থাকে মাইলস্টোন বলে অভিহিত করেছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।এর পেছনে আরেকটি বড় গল্প সৃষ্টি করতে চলেছে চীন। তারা এমন এক প্রযুক্তি প্রথমবারের মতো ব্যবহার করতে চলেছে, যেখানে বিনিয়োগ করতে দীর্ঘদিন ধরেই সিদ্ধন্তহীনতায় ভুগছে পশ্চিমা বিশ্ব।এ ক্ষেত্রে চীন নেতৃত্বের হাল ধরবে।আপাতত জিনান নেটওয়ার্কের মধ্যে সেনাবাহিনী, সরকার, অর্থনীতি ও ইলেকট্রিসিটি অংশের ২০০ জন বাছাইকৃত মানুষ এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদে মেসেজ পাঠাতে পারবেন। একমাত্র তারাই এটি পড়তে পারবেন।কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন খাতে চীন বড় ধরনের পদক্ষেপ যে নিতে চলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা ক্রমশ নিরাপত্তাহীন হতে থাকে ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। খুব শিগগিরই এ সংক্রান্ত ব্যবস্থা গোটা বিশ্বে বিক্রি শুরু করবে চীন। এটাই হবে ভবিষ্যত চীনের বিশাল অর্থনৈতিক উৎস। কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন পদ্ধতিতে অনলাইন নিরাপত্তায় ঢেকে যাবে।লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের প্রফেসর মাইয়ুংশিক কিম জানান, আসলে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ এ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা অনুভব করেনি। হতে পারে প্রযুক্তি বাণিজ্যিক পণ্য নির্মাতারা এর প্রয়োজন দেখায়নি মানুষকে। তাছাড়া বর্তমান কোডিং সিস্টেমও কিন্তু শক্তিশালী। তাই নতুন প্রযুক্তি আনার কথা মনে করা হয়নি কখনো। যে প্রযুক্তি নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে চীন, তা যে একেবারে নতুন চিন্তা তা নয়। তবে চীন প্রথমবারের মতো একে আয়ত্ত করছে। কাজেইভবিষ্যতে এ বিষয়ে যাবতীয় সুবিধা চীনই পাবে।অস্ট্রেলিয়ার ভিয়েনা ইউনিভার্সিটির কোয়ান্টাম ফিজিসিস্ট প্রফেসর অ্যান্টন জেলিংগার বলেন, এ ক্ষেত্রে ইউরোপ স্রেফ নৌকাটা মিস করেছে। সেই ২০০৪ সাল থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কোয়ান্টাম-ভিত্তিক প্রযুক্তি সম্পর্কে অবহিত। কিন্তু এর পেছনে খুব অল্প সময় ব্যয় করেছে তারা।ইউরোপ এবং আমেরিকাতে কোয়ান্টাম-ভিত্তিক বেশ কিছু প্রজেক্ট চলছে। তবে সেগুলো কেবলই গবেষণার পর্যায়েই রয়েছে।বাণিজ্যিক দিক থেকে একটা সমস্যা অবশ্যউঠে এসেছে। জিনান নেটওয়ার্কের মতো বড় মাপের ও দামি খাতে অ্যাপ্লিকেশনের কোনো বাজার এখনো নেই। তাই দরকার সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু চীন বিনিয়োগ করতে চলেছে। কাজেইবাজারটি তাদের দখলেই থাকবে। অন্যরা হবে সেই বাজারে ক্রেতা। আর এর জন্য চাইনিজ মিলিটারির অর্থনৈতিক ও লোকবল রয়েছে যথেষ্ট। গত বছরই তারা কোয়ান্টামকমিউনিকেশনে ভরপুর যন্ত্রপাতি দিয়ে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে মহাশূন্যে। এই যোগাযোগ ক্যাবলের মাধ্যমে আনা সম্ভব নয়। সংযোগ ঘটনো হচ্ছে দেশের বেইজিং এবং শাংহাইয়ের মতো দুটো মূল হাবে।বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন এই প্রযুক্তির বাজার তৈরি হচ্ছে। একবার চীন এই প্রযুক্তি যখন বিক্রি শুরু করবে, তখন বিশ্বব্যাপী তাদের ক্রেতা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে তাদের ইন্টারনেটব্যবস্থা হবে হ্যাকিং সম্ভব হবে না।

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages