আজ ২৬ রমজান। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) মহিমান্বিত রজনী বা লাইলাতুল কদর তালাশ করার জন্য সম্ভাব্য যে পাঁচটি বেজোড় রাতের উল্লেখ করেছেন তার মধ্যে আজকের দিবাগত সাতাশের রাতটি অন্যতম। অনেক ওলামায়ে কেরামদের মতে এই ২৬ তম দিবাগত রাতটি শবে কদরের রাত। মুসলমানদের কাছে শবেকদর অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত।এ রাতের আর একটি গুরুত্ব হলো- এ পবিত্র.রাতেই কুরআন নাজিল হয়েছে। আরএই কুরআনের সাথেই মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এ জন্য কদরের আর একটি অর্থ হলো ভাগ্য। তা হলে লাইলাতুল কদরের অর্থ হয় ভাগ্যরজনী।লাইলাতুল কদরের ফজিলতএ রাত হাজার মাস থেকে উত্তম ও কল্যাণময় (কুরআন)। এ রাতেই পবিত্র কুরআন নাজিল করা হয়েছে (কুরআন)। এ রাতে ফেরেশতা নাজিল হয় এবং আবেদ বান্দাহদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে।ফজর পর্যন্ত এ রাতে পুরোপুরি শান্তিও নিরাপত্তার (কুরআন)। এ রাতে প্রত্যেকটি ব্যাপারে অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত ও সুদৃঢ় ফায়সালা জারি করা হয় (কুরাআন)। এ রাতে ইবাদতে মশগুল বান্দাহদের জন্য অবতরণকৃত ফেরেশতারা দোয়া করেন (হাদিস)।গুনাহ মাফযে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান সহকারে ও আল্লাহর কাছ থেকে বড় শুভফল লাভের আশায় ইবাদতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে, তার পেছনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে’ (বুখারি ও মুসলিম)। এ রাতের কল্যাণ থেকে একমাত্র হতভাগ্য লোক ছাড়া আর কেউ বঞ্চিত হয় না (ইবনে মাজাহ ও মিশকাত)।শবে কদরের রাতে আমাদের করণীয়১। পবিত্র কুরআন অধ্যায়ন করামানবজাতির এই বিরাট নিয়ামতের কারণেই এ রাতের এত মর্যাদা ও ফজিলত। এই কুরআনকে ধারণ করলেই মানুষ সম্মানিত হবে, একটি দেশ ও জাতি মর্যাদাবান হবে; গোটা জাতির ভাগ্য বদলে যাবে। কাজেই এ রাতে অর্থ বুঝে কুরআন পড়তে হবে। কুরআনের শিক্ষাকে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠার শপথ গ্রহণ করতে হবে। বাছাইকৃত কিছু আয়াত এ রাতে মুখস্থও করা যেতে পারে। যাদের কুরআনের ওপর প্রয়োজনীয় জ্ঞান রয়েছে তারা এ রাতে একটি দারসও প্রস্তুত করতে পারেন। কুরআনের এ গভীর অধ্যয়ন আমাদের সৌভগ্যের দ্বার খুলে দেবে।২। নফল নামাজঃন্যূনতম আট রাকাত থেকে যত সম্ভব পড়া যেতে পারে। এ জন্য সাধারণ সুন্নতের নিয়মে ‘দুই রাকাত নফল পড়ছি’ এ নিয়তে নামাজ শুরু করে শেষকরতে হবে। এ জন্য সূরা ফাতেহার সাথে আপনার জানা যেকোনো সূরা মেলালেই চলবে। বাজারে প্রচলিত কিছু বইতে ৩৩ বার সূরা আল কদর, ৩৩ বার ইখলাস ইত্যাদি উল্লেখ করে অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। হজরত আশ্রাফ আলী থানবি র:, মাওলানা ইউসুফ ইসলাহী র: এবং এ পর্যায়ের বরেণ্য ফকিহরা এগুলোজরুরি মনে করেন না। এ ছাড়া সালাতুল তওবা, সালাতুল হাজত, সালাতুল তাসবিহ নামাজও আপনি পড়তে পারেন।৩। জিকির ও দোয়াঃহাদিসে যে দোয়া ও জিকিরের অধিক ফজিলতের কথা বলা হয়েছে,সেগুলো থেকে কয়েকটি নির্বাচিত করে অর্থ বুঝে বারবার পড়া যেতে পারে। ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) ও দরুদ আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। কমপক্ষে ১০০ বার ইস্তেগফার ও ১০০ বার দরুদ পড়া যেতে পারে। হজরত আয়েশা রা: বলেন- আমি রাসূলুল্লাহ সা:-কে বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ, যদি কোনো প্রকারে আমি জানতে পারি রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে কী দোয়া করব? জবাবে নবী সা: বলেন, এই দোয়া পড়বে- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুব্বুন কারিমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! তুমি বড়ই মাফ করনেওয়ালা এবং বড়ই অনুগ্রহশীল। মাফ করে দেয়াই তুমি পছন্দ করো। অতএব, তুমি আমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দাও।’ হজরত আয়েশা রা:-কে শেখানো দোয়া আমরা আবেগের সাথে বারবার পড়ব।৩। মুনাজাতঃমুনাজাতের মাধ্যমে বান্দাহর বন্দেগি ও আল্লাহর রবুবিয়াতের প্রকাশ ঘটে। বান্দাহ তার প্রভুর কাছে চায়। প্রভু এতে ভীষণ খুশি হন। মহন আল্লাহ তার বান্দাহর প্রতি এতটাই অনুগ্রহশীল যে, তিনি তার কাছে না চাইলে অসস্তুষ্ট হন। ‘যে আল্লাহর কাছে কিছুচায় না আল্লাহ তার ওপর রাগ করেন’ (তিরমিজি)। ‘দোয়া ইবাদতের মূল’ (আল হাদিস)। ‘যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা তার জন্য রহমতের দরজাও খোলা রয়েছে’ (তিরমিজি)। কাজেই আমরা কায়মনোবাক্যেআল্লাহর দরবারে মুনাজাত করব, ক্ষমা চাইব, রহমত চাইব, জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব। মনের আবেগ নিয়ে চাইব। চোখের পানি ফেলে চাইব। আল্লাহ আমাদের হাত খালি হাতে ফেরাবেন না ইনশাআল্লাহ।উপরিউক্ত আমলের মাধ্যমে আমরা এ পবিত্র রাতগুলো কাটাতে পারি। লাইলাতুল কদর পাওয়ার তামান্না নিয়েনিষ্ঠার সাথে অনুসন্ধান করলে আল্লাহ আমাদের বঞ্চিত করবেন না ইনশাআল্লাহ।
Post Top Ad
Your Ad Spot
Thursday, June 22, 2017
Home
Islamic Story amp; Hadis
আজ পবিত্র শবে কদরের রজনী। আসুন জেনে নিই পবিত্র শবে কদরের ফজিলত এবং এ রাতে
আমাদেরকরণীয়।
আজ পবিত্র শবে কদরের রজনী। আসুন জেনে নিই পবিত্র শবে কদরের ফজিলত এবং এ রাতে আমাদেরকরণীয়।
Tags
Islamic Story amp; Hadis#
Share This
About Raihanul Haque
Islamic Story amp; Hadis
Labels:
Islamic Story amp; Hadis
Post Top Ad
Your Ad Spot
Author Details
----