সুখ বিষয়ে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে নানা পরামর্শ। যেগুলো আপনার মাথা ঘুরিয়ে দেবে।তথাপি এটা বোধগম্য, সকলেই আলাদা। কোনো একজনকে যা সুখী করবে তা হয়তো অন্য কাউকে সুখিনাও করতে পারে।তবে এমন পাঁচটি বিজ্ঞান সম্মত বিষয় আছে যেগুলো আপনাকে অবশ্যই সুখি করবে।দলাইলামা বলেছেন সুখ কোনো রেডিমেড জিনিস না। আমাদের নিজেদের তৎপরতা থেকেই আমার সুখ লাভ করি।ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় লস অ্যাঞ্জেলেস এর গবেষক অ্যালেক্স কর্ব মস্তিষ্কে ভিন্ন ভিন্ন সুখ কৌশল নিয়ে গবেষণায় দীর্ঘ সময় ব্যয় করেছেন। তার গবেষণা থেকে আমরা শিখেছি কীসে সত্যিকার অর্থেই সুখ বাড়ে।তার গবেষণায় দেখা গেছে আপনার চিন্তাগুলো এবং সে চিন্তার প্রতিক্রিয়ায় আপনি যে আবেগ অনুভব করেন তা আপনার মস্তিষ্কের বিস্ময়কর কিছু এলাকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।১. কৃতজ্ঞতাবোধ সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করে:এটি সত্যিকার অর্থেই একটি স্নায়বিক অবসাদ দূরকারী উপাদান। কৃতজ্ঞতাবোধ মস্তিষ্কে সেরোটোনিন এবং ডোপামিন নিঃসরণের হার বাড়ায়। অবসাদরোধী ওষুধও মস্তিস্কের এই রাসায়নিকগুলোকে টার্গেট করে কাজ করে।আর কৃতজ্ঞতাবোধ সম্পর্কে সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্যটি হলোএটি যখন আপনার সময় ভালো যাচ্ছেনা তখনও বেশ কার্যকর হয়। আপনাকে শুধু আপনার জীবনে এমন কোনো বিষয়ে ভাবতে হবে যা নিয়ে আপনি সত্যিই কৃতজ্ঞ বোধ করেন।২. নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে আখ্যা দিলে সেগুলোর ক্ষমতা কমে:গবেষণায় দেখা গেছে নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে নামকরণ করলে মস্তিষ্কের সম্মুখভাগের বহিরাবরণ এর আবেগউৎপাদন অংশ অ্যামিগডালার ওপর জয়ী হয় এবং একে শান্ত করে নিয়ে আসে। এটি শুধু আপনার নিজের আবেগের ওপরই কাজ করে না।অন্যদের নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকেও একইভাবে আখ্যা দিলে তারাও শান্ত হয়ে আসেন। আর এই কারণেই এফবিআই এর জিম্মি মধ্যস্থতাকারীরা এই কৌশলটি ব্যবহার করেন।৩. সিদ্ধান্ত প্রণয়নে ভালো অনুভূতি:এই কৌশলটিও আগেরটির মতো মস্তিষ্কের সম্মুখভাগের বহিরাবরণকে বেশি সক্রিয় করে যা অ্যামিগডালা এবং আবেগ অনুভূতি উৎপাদক বাকী অংশকেও নিয়ন্ত্রণ করে। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো একটি “যথেষ্ট ভালো” সিদ্ধান্ত প্রণয়ন। একেবারে নিখুঁত সিদ্ধান্ত প্রণয়নের চেষ্টা করার ফলে মস্তিষ্কে অবসাদ তৈরি হয়। এটা আমরা আগে থেকেই জানতাম। তবে এখন এর একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও পাওয়া গেছে। “যথেষ্ট ভালো” একটি সিদ্ধান্ত প্রণয়নের ফলে মস্তিষ্কের সেইঅঞ্চলটি সক্রিয় হয় যেটি আবেগ অনুভূতি সৃষ্টিকারী এলাকাটিকে শান্ত করা এবং নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কাজ করে। অন্যদিকে, নিখুঁত সিদ্ধান্ত প্রণয়নের চেষ্টা করলে মস্তিষ্কের আবেগ অনুভূতি সৃষ্টিকারী এলাকাটুকু আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে উঠে।৪. অন্যকে সহযোগিতা আপনি সুখী হবেন:সহকর্মীদেরকে তাদের কাজ সম্পাদনে সহযোগিতা করলে এতে শুধু ওই সহকর্মীরাই সুখী হন নাএতে আপনি নিজেও সুখ অনুভব করবেন। অন্যকে সহযোগিতা করলে আপনার মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন এবং ডোপামিন নিঃসরণের হার বেড়ে যাবে যা আপনার মধ্যে সুখানুভূতি সৃষ্টি করবে।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সহকর্মীদেরকে সহযোগিতা করেন এর ফলে তাদের নিজেদের কাজেও মনোযোগ ১০ গুন বেড়ে যায়। আর এদের প্রমোশনের সম্ভাবনাও ৪০% বেড়ে যায়। একই গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অন্যদের প্রতিসামাজিক সহযোগিতা সরবরাহ করেনতারা উচ্চ চাপের সময়েও সুখী থাকতে পারেন। তবে অন্যের প্রতি অতিবেশি প্রতিশ্রুতিশীল না হয়ে বরং সাধারণভাবে সহযোগিতা করলেই তাআপনার সুখের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।৫. আমাদের মস্তিষ্ক অন্যের সংস্পর্শের জন্যই তার দিয়ে বাঁধা:মানুষ মাত্রই সামাজিক প্রাণি। দৈহিক বেদনার প্রতি আমাদের মস্তিষ্ক যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ঠিক তেমনি সমাজ থেকে বিচ্যুত হওয়ার ঘটনায়ও আমাদের মস্তিষ্ক একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। দুই ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের একটি বিশেষ এলাকা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আবার একইভাবে আমাদের মস্তিষ্ক স্পর্শকে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে ব্যাখ্যা করতে হার্ডওয়্যার করা।অক্সিটোসিন নিঃসরণে স্পর্শ প্রধান উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। যা মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা অংশকে শান্ত করে এবং পরিণতিতে আবেগগুলোকেও নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি শুধু পছন্দেরকোনো মানুষের হাত ধরার ফলেই ব্যাথার প্রতি মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া কমে আসে। স্পর্শঅবসাদের পেছনে দায়ী হরমোন নিঃসরণ কমায়, ব্যাথার অনুভূতি কমায়, ঘুমের গুনগত মান বাড়ায় এবং ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে।
Post Top Ad
Your Ad Spot
Friday, March 30, 2018
যে পাঁচ জিনিস আপনাকে আরো সুখী করবে
Tags
Fun amp; Lifestyle Menu#
Share This
About Raihanul Haque
Fun amp; Lifestyle Menu
Labels:
Fun amp; Lifestyle Menu
Post Top Ad
Your Ad Spot
Author Details
----